ফাঁকা দোলনা টা, ভিজে যায় বৃষ্টি তে,
ভিজে যায় আমার ছেলেবেলার ইতিহাস,
পুরোনো স্কুলবাড়ির হাতছানি, ধুলোমাখা,
খুঁজে ফেরে একমুঠো অবকাশ।

ভিজি আমিও একলা একলা রোজ,
একটা অন্য কিছু খুঁজে পাওয়ার খোঁজ।
ভেজে শুধুই আমার শূন্যতা।
তবু আকড়ে থাকি ফিরে পাওয়ার রূপকথা।

From Onyosomoy.
বাহিরে বহিছে সুখ, আর অন্তরে বহিছে শুধুই নিশ্বাস,
ভালো থাকার একমাত্র পথ 'বেচে থাকা' ই আজ আমার বিশ্বাস!
বেলা শেষে তাই ফিরে যাওয়া আমার অবুঝ গভীরে,
অন্ধকারে ফেলে আসা সেই সব মাটি আর সবুজের ভিড়ে...

From Onyosomoy.

হ্যা, বেসরকারীই বটে! মানুষই মরে  যখন ভুত হয়, তখন ভুতের পরিচয়ই বা আর পালটায় কেন! মানুষ যখন হিন্দু মুসলিম, ধনী গরিব ব্যতিরেকে শুধু বেসরকারি চাকুরিজীবি বলেই পরিচিত হয়ে থাকে, তখন ভুতের ক্ষেত্রেও সেই সূত্রই খাটে বৈকি!

এহেন কলিকাতা তে বেসরকারি চাকুরিজীবি মনে ক্ষমতা পরিসীমিত, যার বাইরে ভাবনারও কোনো আভাস পাওয়া যায় না! কাজ করা তো দূরের কথা!

যখন ভুতের কথাই হচ্ছে, কিছু বেসরকারি ভুতের কথাই বলা যাক। কলিকাতা এবং বহির্বিশ্বের বহু লোকের অভিমত, wipro অফিসে নাকি ভুত আছে। বহুজন নাকি তাদের দেখেওছে! যদিও যারা দেখেছে, তাদের কারা দেখেছে, তা আমার জানা নেই।


সে কথা কতখানি সত্যি, কত টা মিথ্যে, সে প্রশ্নে না যাওয়াই ভালো, তবে কথাখানা রোমাঞ্চকর তো বটেই!
গত আড়াই বছর সেই ভুতুড়ে অফিসেই কাজ করছি আমি! যদিও তেমন কোনো ভুতুড়ে লোকের হদিশ পাইনি! বলাই বাহুল্য, ভুত বাবাজি থেকে থাকলেও দর্শন দিতে নারাজ!
বেশ কিছু ঘটনা যা শুনেছি, যেমন, wash রুম এ নাকি মাঝে মধ্যে কোনো সাদা কাপড় পরে কাউকে দেখা যায়। আবার নাকি সে নিমেষেই মিলিয়ে যায়। লিফ্ট টাও মাঝ রাতে কখনো কখনো থেমে যায়, দরজা আপনা থেকেই খুলে যায়, যেন কেউ লিফ্ট ব্যবহার করছে!
সাম্প্রতিককালে আমি সেই বিল্ডিং গুলোরই একটাতে কাজ করছি। যথারীতি আমি আর আমার সাথে যারা রয়েছে, সর্বদাই খুঁজে চলেছি তাদের!

মাঝে কয়েকদিন কাজ শেষ করতে বেশ দেরি হতো। তখন রাত পর্যন্ত কাটাতে হতো। সে সময়ে আমিও বেশ কিছু ঘটনা দেখেছি, যার কোনো বাস্তবিক ব্যাখ্যা আমি পাইনি।

খালি ঘরে আমি যখন কাজ করছি, ঘরে আর কেউ নেই। হঠাৎ ই শোনা যেত কীবোর্ড এর শব্দ। বুঝি কেউ কম্পিউটার এ কাজ করছে। প্রথম দিন টা অতটা খেয়াল করিনি। দ্বিতীয় দিন ও একই ঘটনা। ভাবলাম বুঝি সিপিইউ এর ভিতরে কিছু আওয়াজ হচ্ছে। উঠে দেখতে গেলাম। কিন্তু ঘরের পিছনের দিকে গিয়ে যখন দাঁড়ালাম, আওয়াজ টা বন্ধ হয়ে গেল। রোজই এই একই ঘটনা ঘটতো। আমি যেই পিছনে তাকাতাম আওয়াজ বন্ধ হয়ে যেত। সিপিইউ এর ফ্যান এর আওয়াজ আমি চিনি। কিন্তু এ কীবোর্ড এর আওয়াজ এর কোনো উৎস খুঁজে পেতাম না।

মাঝে মাঝে দরজাতে টোকা দেওয়ার শব্দ হতো! বাইরে বেরিয়ে কাউকে দেখতে পেতাম না। আর এরকম টা ঠিক তখনই হতো যখন আমি একা থাকতাম।

সেদিন কয়েকজন বললো ব্যালকনিতে যাওয়ার গেট টা নাকি আপনা দিয়েই খুলে আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একজন নয়, চার পাঁচ জন একই ঘটনা দেখেছে, এবং সেখানে কেউ ছিল না! না কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, না হাওয়ায় খুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ!!

এত কিছু বুঝি, তবু তাদের দেখতে পেলাম না আজ অব্দি। সে ইচ্ছে আমার অপূর্ণই রয়ে গেছে। হবেও না বোধ হয়।

সে যাই হোক, বোধ হয় তারা দেখা দেন না, তারা বেসরকারি চাকুরিজীবি ছিলেন বলেই। ক্ষমতার সীমা পার করতে তারা কেউই আশাবাদী নন। সেই ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করার পর যখন আমার নিজের বাড়ি তে শুধু শুতে যাই, আবার কালকের কথা ভাবতে ভাবতে না জানি কালও এসে পড়ে! ভাবতে ভাবতেই শেষ হয়ে যায় দিন , সপ্তাহ, মাস, বছর। রয়ে যায় শুধু সংজ্ঞা টা। চাকুরিজীবি!

সেই ভুতদের বেলাতেও বোধ হয় তাই! হয়তো এই অফিসে, নতুবা অন্য কোনো অফিসে, হয়তো অফিসেই নয়, অন্য কারো বাড়িতে, কারও কারখানায়, কারও সেরেস্তায়, কারও জমিতে, এভাবেই কেটেছে দিন! রাতও! আর এমনিভাবে নিজের ও পরিবারের জন্য শহীদ হয়েছেন। সেই তাদের ক্ষমতা সীমিতই হবে, তা তো জানা কথা! তাই তাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ আমি দেখিনা!

আমি নির্বিঘ্নেই তাদের সাথে দিন ও রাত কাটাই। জানি তারাও আমার মতই। অনেক কিছু ভাবে। কিন্তু করার সময়, ওই! "বেসরকারি চাকুরিজীবি"!!

From Onyosomoy.
আমি হারিয়ে ফেলেছি ভাষা,
আমি হারিয়ে ফেলেছি ঘুম,
আমি হারিয়ে ফেলেছি শৈশব,
আর আমার সাদাকালো ক্লাসরুম!

আমার একলা রঙিন আইসক্রিম,
আমার বাড়ি ফেরার ফুটবল,
আমি হারিয়ে ফেলেছি শৈশব,
আমার মেঠো পথের কাশফুল।

আমি হারিয়ে ফেলেছি নদী,
তার সাঁতরে বেড়ানোর ইচ্ছে,
আমার সন্ধ্যে নামলে নিঝঝুম,
আমায় একলা করে দিচ্ছে!

আমার সোহাগ ভরা শৈশব,
জানি তুমিও গিয়েছো হারিয়ে,
আমার অলীক স্বপ্ন আঁকড়ে,
গিয়েছি আলোকবর্ষ পেরিয়ে।

জানি ফিরবো না আর কোনোদিন,
সেই গল্প শোনার আসরে,
যেখানে সন্ধ্যা নামলে তারারা,
ভাসে কল্পনার সাগরে।

সেই ধূসর নীল আকাশটা,
আজ শুধু কংক্রিটেরই গৌরব,
আজ সব পেয়েছি'র চাহিদায়,
আমি হারিয়ে ফেলেছি শৈশব।


From Onyosomoy.

আনন্দ! আদতেই একটি আনন্দময় শব্দ! তবু এ শব্দও যে বিপদজনক হতে পারে, তা কে জানতো!

আমার এক বন্ধুর একটি অভ্যাস ছিল! বদভ্যাস ই বলা ভালো! মানুষজনকে "ভালো তো" বলার জায়গায় বলতো "আনন্দ তো!"

একদিন গাড়িতে উঠেছে সে! পরিচিতা একজন মেয়েকে দেখে বলে বসেছে সে কথা! নতুন শব্দ জুড়ে  বলেছে "কি! বেশ আনন্দ তো?!"

দুর্ভাগ্যবশত মেয়েটির পরীক্ষার ফলাফল খুব খারাপ হয়েছিল, এবং সে নিয়ে সে বেশ চিন্তিত ছিল। এমন সময়ে এরকম একটা কথা জিজ্ঞেস করায় তার উত্তর কি হতে পারে, তা জানারই কথা!

তারপর থেকে সে আর কখনো কাউকে আনন্দের কথা জিজ্ঞেস করার সাহস পায়নি!!
From Onyosomoy.
  প্রতি বছরের মতো এ বছরও শেষ হয়ে গেল বইমেলা। হ্যা, সেই অবধারিত মন্তব্য টাই বইমেলার সবার মুখে। তবু যেটুকু তার 2015 থেকে 2016 হতে লেগেছে, তা হয়তো গত বছর তার ছিল না। আগামী বছরেও থাকবে না। সেই নতুনের আনন্দ টুকু বুঝি একেবারেই নতুন। সেই চিরাচরিত ভিড়, বই কেনা, না কেনা, দেখা, না দেখা, হারানো, খুঁজে পাওয়া, সেই ছোট্ট ছোট্ট আবেগ গুলো আবার ফিরে পাওয়া মুশকিল! তাই হয়তো প্রতিটা বইমেলা  আলাদা। কিছু নতুন দিয়ে যায়, বইয়ের বাইরেও!
  এক মহিলা বলছিলেন, "খামোখা এখান দিয়ে কিনলে তো 10% ই ছাড় পাওয়া যাবে। কলেজ স্ট্রিট দিয়ে কিনলে তো 20-25 % ছাড় পাওয়া যাবে!!" প্রসঙ্গ টা বাস্তবিক। আমরা এই মুদ্রাস্ফীতির যুগে মূল্যবোধ টাকেই প্রাধান্য দেব, এ আর নতুন কি!! তবে কিনা আমরা যারা নিত্য যাত্রী,যাদের সকাল হয় অফিসে আর সন্ধ্যে, সেটাও হয় অফিসে, তাদের জন্য বইয়ের চাহিদা সাময়িক। নেহাতই উদ্দেশ্য প্রনোদিত। এখন তাদের এই সময়ের কালচক্রে (মানে ওই কাল করবো, কাল করবো, ওই আর কি!!) অফিস ছেড়ে বই কিনতে যাওয়া খুবই মুশকিলের! এহেন সময়ে যদি কেউ সব বই, যা কলেজ স্ট্রিট এ দেখতে পাওয়া যায়, যা গোডাউন এ অন্ধকারে পরে থাকে , এমনকি যা কলেজ স্ট্রিট যাওয়ার আগেই প্রেস থেকে বইমেলায় পৌঁছায়, সেই সব বই হাতে পেলে 10% ছাড় আমাদের তরফ থেকেও দেওয়া যেতেই পারে। বিশেষত যেখানে আবেগ জড়িয়ে আছে।
  বইমেলা আমার মতো অনেকেরই পিছুটান। সুযোগ সন্ধানী বহু মানুষের স্মৃতি আকুলতার খোরাক যোগায় বইমেলা। সেই যে ছোট্ট বেলায় বাবার হাত ধরে বইয়ের স্টলে স্টলে ঘুরেছি, বইয়ের গন্ধ গায়ে মেখেছি,  আর টুকরো টুকরো Nostralgia গুলোকে আকড়ে ধরে আজও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে চলেছি, সেই পরম্পরা আজও চলেছে বাকি দের মধ্যে। কত ছোট্ট ছোট্ট অবাক হওয়া মুখ সামনে নাম না জানা অজানা বইয়ের নাম জানতে ব্যস্ত, হয়তো তারাই একদিন তাদের কচিকাঁচাদের নিয়ে ভিড় জমাবে বইমেলায়। ক্রমেই চলতে থাকবে তাদের এই বইয়ের দেশে adventure, অবলীলাক্রমেই চলতে থাকবে!
  হয়তো এই রীতি, এই আদর্শ গুলো একই থেকে যাবে, পাল্টে যাবে শুধু আধুনিকতার পরিচয় টা, পাল্টে যাবে বই , তাদের লেখক, তাদের লেখারাও.. আমরা যা পেয়েছি, তা পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো পাবে না। যা তারা পাবে, হয়তো আমরা তা জানতেও পারবো না। কিছুটা আবেগ আর কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই কেটে যাবে স্মৃতির বইমেলা।।

From Onyosomoy.

শেষ দিনের শেষ আলোটুকুও অবসানের পথে, হয়ত ঠিক, জীবনের নয়, তবে নিটোল মাটির সুরে গড়া কোন সম্পর্কের। জ্বলে উঠেছিল LCD Screen এর আলোটা। একরাশ অচেনা আবেগ নিয়ে তাকিয়েছিলাম Message-পানে। হাজার হোক, তবু মন কি তা জানে! (মানুষ পাথর হয় কেমনে?) উত্তর খুঁজে পাইনি সেদিন, আর আজও! বলেছিল-"ভাগ্যের ফের! আবার নাকি দেখা হবে!" সেকি আমার শহরেই! সেই ছোট্ট দুটো হাত আজ অনেক বড় হয়ে গেছে, আমার হাতের থেকেও বোধ হয় বড়! বাড়েনি শুধু স্মৃতির দেওয়ালটুকু! যন্ত্রণার কোঠরে আগলে রাখা সময়গুলো সত্যিই কি আর ফিরবে না? সত্যিই কি সে আজ শুধুমাত্র অন্য একজন, হাজার মনের মতই??


From Onyosomoy.


মন, আলোর ফাঁকে, বেড়ে ওঠা কখন,
স্বপ্নের খোঁজে পথ চেয়ে থাকা মন,
সময়ের পাতায় শেষ লেখা গল্প তখন,
আলোর নিশানায় শেষ কথা শুধুই মন।
নকশি কাঁথার মিঠে রোদ্দুর যখন,
স্কুলের বিকালে অপেক্ষায় থাকা জীবন।
নিয়মের খেলায় নিয়ম ভাঙ্গা সাহসী মন,
নিষেধের বেড়াজালে তার ছোট্ট প্রতিসরণ।
প্রশ্নের আড়ালে উত্তর খোঁজেনি মন,
রাতের মিনারে স্বপ্নে ভেজা একটা মন,
খোলা আকাশে বৃষ্টির নেশা তখন,
অবহেলায় কুড়ে খাওয়া ছোট্ট জীবন,
বিকেলের রাঙা রোদে ছোট্ট ধূলির ক্ষণ।
স্বপ্নের কুয়াশায় ফিকে হয়ে গেছে মন,
তবুও ভালো লাগার, ভালবাসার এই মন,
দুঃখের ক্যানভাস ভুলে গিয়েছে কখন।

From Onyosomoy.


নিয়ন আলোর ঝড় বইছে দিনে,
আমি একলা সুখ খুঁজে ফিরছি রোজ,
হারিয়ে যাওয়া কোন শূন্যতায়,
কোন অচেনা সুখ দিচ্ছে ডাক আমায়
এ কোন ভিনদেশীদের ভীড়,
আমি একমুঠো অস্থির,
ফিরে পাব কি তোমায় আর কোনদিন?
আমার হাজারো যন্ত্রণায়,
আমি ফুটপাতের সন্ধ্যায়,
খুঁজে ফিরছি স্বপ্ন রোজ,
কত সাদা কালো বেরঙিন।